
সপ্তম শ্রেণীর পরিবেশ ও বিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
1. পশ্চিমবঙ্গের একটি অভয়ারণ্যের নাম লেখো।
বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্য
2. আবহাওয়া কি?
আবহাওয়া হলো এক প্রকার বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থা যা দিনে দিনে এমনকি ঘন্টায় ঘন্টায় পরিবর্তিত হয়।
3. জলবায়ু কি?
আবহাওয়ার র্দীঘ সময়ের গড় অবস্থাকে জলবায়ু বলে।
4. পৃথিবীর ছেড়ে দেওয়া তাপশক্তিকে ধরে রাখতে কে সাহায্য করে?
বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের চাদর
5. প্রবাল কি?
প্রবাল বা কোরাল হল এক রকমের কন্টক যুক্ত অমেরুদন্ডী প্রাণী।
6. প্রবাল দ্বীপ কি?
মৃত প্রবালের প্রাচীর অন্যান্য জৈববস্তুর সাথে মিশে যে দ্বীপ গঠিত হয়, তাকে প্রবাল দ্বীপ বলে।
7. প্রজাতি বৈচিত্র কাকে বলে?
কোনো স্থানে যত প্রকারের প্রজাতি আছে, তাকেই প্রজাতি বৈচিত্র বলে।
8. কোন কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জীববৈচিত্রের বিলুপ্তি ঘটছে?
খরা, ভূমিকম্প, সুনামি, বন্যা ইত্যাদি
9. ভারত ছাড়া কয়েকটি মেগাডাইভারসিটি নেশনের নাম লেখো।
ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মাদাগাস্কার
10. সিকিম কোন বায়োডাইভার্সিটি হটস্পটের অন্তর্গত?
পূর্ব হিমালয়
11. কোন প্রাণী থেকে মৃগনাভি পাওয়া যায়?
হিমালয়ের কস্তুরী মৃগ
12. পৃথিবীর কোন অঞ্চলে জীববৈচিত্র কম দেখা যায়?
তুন্দ্রা অঞ্চলে
13. প্রবাল কোন পর্বের অন্তর্ভুক্ত প্রাণী?
নিডারিয়া
14. গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে কোন যদি সৃষ্টি হয়েছে?
গঙ্গা নদী
15. SPM এর পুরো নাম কি?
Suspended Particular Matter
16. উত্তরাখন্ডে কত সালে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছিল?
2013 সালে
17. শব্দের তীব্রতা কমাতে পারে কয়েকটি গাছের নাম লেখো।
বেল, ছাতিম প্রভৃতি
18. সুন্দরবনে কোন প্রকার অরণ্য দেখা যায়?
ম্যানগ্রোভ অরণ্য।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
1. উৎপাদক কি?
সূর্যের আলো ব্যবহার করে উদ্ভিদ এবং খাদ্য উৎপাদনে সক্ষম জীবের খাদ্য তৈরী করে। তাদের দেহের নানা অংশে এই খাদ্য সঞ্চিত থাকে। এদের উৎপাদক বলে।
2. খাদক কি?
যারা উৎপাদকের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে, তাদের খাদক বলে।
3. খাদ্যশৃঙ্খল কি? উদাহরণ দাও।
খাদ্য খাদকের সম্পর্ককে খাদ্যশৃঙ্খল বলে।
উদাহরণ: ঘাস >> ঘাস ফড়িং >> ব্যাঙ >> সাপ >> ঈগল
4. খাদ্যজাল কি?
একটি খাদ্যশৃঙ্খল অন্যান্য খাদ্যশৃঙ্খলের সাথে সম্পর্ক যুক্ত করে তৈরী করে খাদ্যজাল।
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন উত্তর
1. জীববৈচিত্রের গুরুত্ব আলোচনা কর।
জীববৈচিত্রের গুরুত্বগুলি হল -
- খাদ্য শস্যের বিচিত্র সম্ভার বাড়াতে সাহায্য করে।
- তৃণভোজী প্রাণীদের খাদ্যের যোগানে সাহায্য করে।
- ঘাস জাতীয় উদ্ভিদরা মাটির গঠন রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- মূলযুক্ত উদ্ভিদ মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- জীববৈচিত্রের জন্য জলবায়ুর স্থিতি অবস্থা বজায় থাকে।
- উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষের সময় যে অক্সিজেন গ্যাস নির্গত করে তা পরিবেশকে নির্মল রাখে।
2. পৃথিবীর জীববৈচিত্র হ্রাসের কয়েকটি কারণ লেখ।
পৃথিবীর জীববৈচিত্র হ্রাসের কারণগুলি হল -
- জীববৈচিত্র হ্রাসের একটি কারণ হল বাসস্থান ধংস হয়ে যাওয়া। আমাদের ভোগবিলাসের সামগ্রী তৈরির প্রয়োজনে, কখনও চাষের জমি বাড়ানোর জন্য, আবার কখনও থাকার জায়গা বাড়ানোর জন্য জঙ্গল কেটে ফেলা হয়। যেমন - সাইবেরিয়ার বাঘের অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে।
- পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে কিছু কিছু বন্য জন্তুর হাড়, চামড়া ইত্যাদি ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও দাঁত, চামড়া বা শিং এসবের লোভেও বিভিন্ন প্রাণী চোরাশিকারীদের হাতে প্রাণ হারায়।
- কিছু কিছু সময় বাইরে থেকে আসা নতুন প্রাণী অনেক সময় স্থানীয় প্রাণীদের সংখ্যা হ্রাসের কারণ হয়।
- জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও জীববৈচিত্র সংকটের মুখে পরে। যেমন বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। তার ফলে মেরু ভালুকের অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে।
- পরিবেশ দূষণও জীববৈচিত্র হ্রাসের একটু অন্যতম কারণ। চাষের জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন শস্যভুক প্রাণী। এছাড়াও বিভিন্ন শিল্পের বর্জ্য পদার্থ খাল, বিল, নদীর জলে এসে মিশছে, এর ফলে বহু মাছ ও জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে। যেমন - গঙ্গা থেকে শুশুক বিলুপ্ত হচ্ছে।
3. পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা লেখ।
- গাছ পরিবেশে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য বজায় রাখে।
- গাছ পাতার মাধ্যমে বাষ্পমোচন প্রক্রিয়ায় জলীয়বাষ্প ত্যাগ করে। এই জলীয়বাষ্প মেঘ ও বৃষ্টির সৃষ্টি করে।
- গাছ দ্বারা উৎপন্ন শর্করা জাতীয় খাদ্য খেয়ে আমরা জীবনধরণ করি।
4. প্রাণীদের উপর পরিবেশ দূষণের প্রভাব লেখ।
- চাষের জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বহু শস্য ভক্ষণকারী প্রাণীদের বিলুপ্তি ঘটছে।
- জলাশয়ে শিল্পের বর্জ্য, কৃষিজ সার, কীটনাশক মেশার ফলে বহু মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
- গঙ্গা নদীতে শিল্পের বর্জ্য ও কৃষিজ রাসায়নিক মিশ্রিত হওয়ার ফলে মাছ সহ ডলফিন বিলুপ্ত হতে চলেছে।
5. জলচক্র বলতে কি বোঝো?
পৃথিবীতে তিনভাগ জল ও একভাগ স্থল। পুকুর, খাল, বল, নদী, সমুদ্র জলের আধার। এইসব জল বাষ্পীভূত হয়ে আকাশে গিয়ে শীতল হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে। মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির জল পুনরায় সমস্ত খাল, বিল, নদী, নালা হয়ে পুনরায় সাগরে আসে। বৃষ্টি পড়লে কিছুটা জল মাটির সঙ্গে মিশে যায়। এই জল উদ্ভিদেরা মূল দিয়ে শোষণ করে। উদ্ভিদ অতিরিক্ত জল বাষ্প আকারে ত্যাগ করে। এই বাষ্প জমে মেঘ সৃষ্টি করে। মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়। এই ভাবে জলচক্র চলতে থাকে।
![]() |
উদ্ভিদ ও জলচক্র |